– ইব্রাহিম নোমান
দেশের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে না যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সহযোগী বেশ কিছু ছোট ছোট দলও একই সিদ্ধান্ত আজ সারাদিন ধরে জানাচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের বড় মাপের এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেমন হবে এবং আগামীতে নির্বাচনী রাজনীতিসহ মানুষকে ভোটকেন্দ্রমুখী করা ও দেশের রাজনৈতিক বিভাজন নিয়ে সারাক্ষণের সঙ্গে তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী, প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বেশ খোলাখুলি কথা বলেন। তিনি যেমন তাদের জোট কীভাবে এ নির্বাচনে অংশ নেবে সেকথাও বলেছেন, তেমনি তার মতে বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচনে অবশ্যই একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমনকি তার মতে জনগনকে নির্বাচনে উদ্বুদ্ধ করা বেশ দুরূহ বিষয়।
তার বিস্তারিত সাক্ষাৎকার-
বিএনপি উপজেলো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, এই নির্বাচনে ১৪ দল কি প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে?
হাসানুল হক ইনু : স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কখনো আমরা জোটে নির্বাচন করিনি। ১৪ দলের শরীকরা যার যার মতো নির্বাচনে অংশ নেবে। ইতিমধ্যে সবাই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই নির্বাচনে ১৪ দলের সহযোগী জাতীয় পার্টির কি ভুমিকা থাকা উচিত?
হাসানুল হক ইনু : জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি প্রশাসন নিরপেক্ষ ও আরো বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখবে। তাহলে ভোটাররা স্বাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারবে।
বিএনপি যেহেতেু দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তাতে কি কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন?
হাসানুল হক ইনু : দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না, সেটা কোন বিষয় নয়। বিএনপি চাইলে দলীয়ভবে নির্বাচন করতে পারবে, তাতে কোন আইনী বাধা নেই। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না, এটা আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত। কোনো দল চাইলে তাদের ইচ্ছা মতো দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচন করতে পারবে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের আইনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেউ যদি দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে না চায়, তাহলে সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। তবে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করলেও কোন আইন ভঙ্গ হচ্ছে না।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে অবশ্যই প্রভাব পড়বে, আর সেই প্রভাবটা হবে নেতিবাচক। তবে তারা অংশ না নিলে জনগনের উৎসাহে কতটুকু প্রভাব পড়বে সেটা দেখার বিষয়।
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দেশের অন্যতম প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আপনি, দেশের বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত। এই অবস্থায় জনগনকে নির্বাচনমূখী করার জন্য আপনি রাজনৈতিক দল ও দেশের মানুষকে কি কি পরামর্শ দেবেন?
হাসানুল হক ইনু : দেশের রাজনীতিতে এখনো সাংঘর্ষিক অবস্থা চলছে। এক পক্ষে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর অন্য পক্ষে আছে সরাসরি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ। যারা পরাজিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। রাজাকার, জামায়াত, জঙ্গী এবং তাদের সমর্থক গোষ্ঠী। সুতরাং এই সাংঘর্ষিক অবস্থার মধ্যে নির্বাচনে জনগনকে নির্বাচনমুখী করা একটি বেশ দুরূহ এবং সময় সাপেক্ষ বিষয়।
তাই নির্বাচনে যেসব রাজনেতিক দল অংশ নিচ্ছে, সাংবিধনিক ধারা বজায় রাখছেন, তাদেরকে কষ্টকর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যেন রাজাকাররা বা সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তাদের ভক্ত সমর্থকরা যদি ভোটে অংশ না নেয়, তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব জনগন এবং স্বাধীনতার পক্ষের দলগুলোর ।
সাংঘর্ষিক এই রাজনীতিটা যতক্ষণ পরিষ্কার না হচ্ছে ততক্ষণ প্রতিটি নির্বাচনের ভোট নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে।
Leave a Reply