স্ত্রী হাসনা হেনা ঝিলিক আলমকে (২৮) হত্যা করে রাজধানীর হাতিরঝিলে এনে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনার নাটক সাজানোর হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে নিহতের স্বামী সাকিব আলম মিশুকে আবারো দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গুলশান থানায় নিহতের মা তহমিনা হোসেন আসমার করা হত্যা মামলাটির পাঁচ আসামির অন্য চার জন কারাগারে আছেন। তারা হলেন, ঝিলিকের শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম, শাশুড়ি সাঈদা আলম, দেবর ফাহিম আলম ও বাসার ম্যানেজার আশীষ।
বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাকিব আলম মিশুকে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমানের আদালতে হাজির করে আরো ১০ দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই ফেরদৌস আলম সরকার। আসামিপক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাছানসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন জানান। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামিন নামঞ্জুর করে পুনরায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত রোববার (০৪ এপ্রিল) মিশুসহ পাঁচ জন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি মিশুকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া ও অন্য চার আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে মিশুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ও বাকি চার জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত শনিবার (০৩ এপ্রিল) ঝিলিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তাকে হত্যার পরে মরদেহ হাতিরঝিলে এনে দুর্ঘটনার নাটক সাজান স্বামী মিশু।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের প্রথম দিকে সাকিব আলম মিশুর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় নিহত ঝিলিক আলমের। পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। মিশু বাবা-মায়ের কাছে পছন্দের বিষয়টি জানালে তারা ঝিলিকের পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে বিয়েতে অমত দেন। কারণ, ঝিলিক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সাকিব আলম মিশুর পরিবার গুলশান-২ এর স্থায়ী বাসিন্দা। আর ঝিলিকের পরিবার মোহাম্মদপুরের তাজমহল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাই আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় সাকিবের পরিবার ‘গরিব পরিবারের মেয়ের সঙ্গে’ ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। সাকিব তাকে ছাড়া অন্য মেয়েকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন তার পরিবারকে। একপর্যায়ে ছেলের জেদের কাছে হার মানেন তারা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর মিশুদের বাড়িতেই ওঠেন ঝিলিক। কয়েক মাস তারা ভালোই ছিলেন। ২০২০ সালের শুরুর দিক থেকে শুরু হয় অশান্তি। তার ওপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ওই নির্যাতনেই মারা যান ঝিলিক।
/একে/এআর/