শরতের মধ্যেই করোনাভাইরাস থেকে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করবে দক্ষিণ কোরিয়া। দেরি করে টিকাদান শুরু করার পরেও এ বিষয়ে বেশ আশাবাদী দেশটির প্রধানমন্ত্রী চুং সে কিউন।
গত বছর মহামারিতে আক্রান্ত হওয়া প্রথম দিকের দেশগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণ কোরিয়া। অনেক পরীক্ষা এবং কনট্যাক্ট ট্রেসিং এর মতো আগ্রাসী পদক্ষেপের জন্য দেশটি বিশ্বের কাছেই আদর্শ হয়ে ওঠে। তবে সেই তুলনায় দেশটি বেশ দেরিতে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করেছে।
এই সপ্তাহের শেষে, হাসপাতাল এবং কেয়ার হোমগুলোয় চিকিত্সাকর্মীদেরকে টিকা দেয়া শুরু করবেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের উত্পাদিত ভ্যাকসিন ব্যবহার করে, আগামী মাসের মধ্যে প্রায় ৮ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের করোনাভাইরাস লড়াইয়ের প্রধান সেনা হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার এক বছর পর, একটি সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী চুং সে কিউন দেরিতে বিতরণকে সমর্থন করে বলেন, এটি দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদেরকে দেখার সুযোগ দিয়েছে যে ভ্যাকসিনগুলো অন্যান্য দেশে কেমন ফলপ্রসূ হয়েছে।
তিনি বলেন, "আপনি জানেন যে কোরিয়ানরা হলো গতিশীলতায় সেরা।"
"এই লক্ষ্য অর্জন করা সহজ নয়, তবে সেপ্টেম্বরে অর্থাৎ, তৃতীয় প্রান্তিকের শেষেই আমরা আমাদের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিনের প্রথম সেটটি শেষ করার লক্ষ্য হাতে নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি এটি সম্ভব হবে।"
দেশটির ৫৫ মিলিয়ন মানুষের জন্য সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন বরাদ্দ করেছে, তবে এর বেশিভাগ সরবরাহই জুলাইয়ের আগে এসে পৌঁছাবে না বলে আশা করা যায়। ফলে, সরকারের সময়সীমাটি পূরণের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা মাত্র কয়েক মাস সময় পাবেন।
এই বছরের শেষের মধ্যে নিজস্ব ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার আশা করেছিল সিওল, তবে এখন এটি অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত, দেশটি ফাইজার এবং মডার্নার সঙ্গে জানুয়ারির শেষের দিকে চুক্তি করেছে।
প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন তার নতুন বছরের সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে, এটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সময় নেয়ায় তিনি কোনো আফসোস করেন না।
ঐতিহ্যগতভাবে, দক্ষিণ কোরিয়া গণহারে টিকা গ্রহণ থেকে বিরত থাকে না। হেপাটাইটিস বি জাতীয় বড় রোগগুলোর ক্ষেত্রে, দেশটির টিকাদানের হার সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশি।
তবে, কোরিয়া সোসাইটি অপিনিয়ন ইনস্টিটিউটের একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, জিজ্ঞাসা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ৪৫ শতাংশ তাদের ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন যা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উপলব্ধ হতে পারে। এবং আরো ৪৫ শতাংশ বলেছেন যে তারা "পরিস্থিতি বিবেচনা করা জন্য" তাদের ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরি করতে চায়। এছাড়াও, পাঁচ শতাংশ বলেছেন যে তারা টিকা গ্রহণ করতে রাজি না।
সূত্র: বিবিসি
/এফসি/