২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী জঙ্গি ইকবাল হোসেন ওরফে জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তিনি হরকাতুল জিহাদের সদস্য। হামলার পরপরই আত্মগোপনে চলে যায় মামলার যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত এ জঙ্গি আসামী।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, ওই দিন (২১শে আগস্ট) মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়েছিল ইকবাল। র্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার উপর্যুপরী অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করে সে। প্রথমে ‘সেলিম’ এবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করে।
এর আগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দাদের (এনএসআই) দেওয়া তথ্যমতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ আভিযানিক দল সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর দিয়া বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ইকবাল ঝিনাইদহের আব্দুল মজিদ মোল্লার ছেলে।
র্যাব ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আত্মগোপনে থাকাকালীন ইকবাল নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিক্সা মেকানিকের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল।’ তিনি বলেন, ইকবাল মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর ২০২০ সালের শেষের দিকে অন্যদের মতো তাকেও দেশে ফেরত পাঠানো হয়। সোমবার রাতে গ্রেপ্তার হয়।
র্যাব ডিজি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃনিত, কলংকজনক ও বিভীষিকাময় একটি দিন। সেদিন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘৃন্যভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত; তিনি বেঁচে যান। আলোচিত গ্রেনেড হামলায় শাহাদত বরণ করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই এখনও সেই দুঃসহ এবং বিভীষিকাময় স্মৃতি ও ক্ষত বয়ে চলেছেন।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে দীর্ঘ সাত বছরে সর্বমোট ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়। যুগান্তকারী এই রায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই চাঞ্চল্যকর মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার করতে অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র্যাবও তৎপরতা অব্যাহত রাখে। ইতিপূর্বে র্যাব ২০০৫ সালে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার ভাই মুহিবুল্লাহ ওরফে মফিজ ওরফে অভিকে গ্রেপ্তার করেছিল। এছাড়া এই মামলার সংশ্লিষ্টতায় ২০০৭ সালে ১৬টি আরজিএস গ্রেনেড উদ্ধারসহ এ পর্যন্ত ১৫ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
/এনএএইচ/শাআ/