জীবদ্দশায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য বিখ্যাত মানুষদের নিয়ে বায়োপিক নির্মাণের প্রচলন বলিউডে বেশ পুরোনো। ইন্দিরা গান্ধীর জীবনী থেকে শুরু করে বালাসাহেব ঠাকরের জীবনীর ওপর নির্মাণ করা হয় সিনেমা। এই ধারাবাহিকতায় এবার নির্মাণ করা হবে জয়পুরের রাজমাতা গায়ত্রী দেবীর বর্ণময় জীবন নিয়ে ওয়েব সিরিজ। কি নামে ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করা হবে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে 'দ্য রাজমাতা অব জয়পুর' নামে ওয়েব সিরিজটির প্রচারিত হবে।
সম্প্রতি টুইটারে আইএন-১০ প্রযোজনা সংস্থা গায়ত্রী দেবীকে নিয়ে ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করার সু-সংবাদ টি প্রকাশ করেন। আইএন-১০ এবং ম্যাঙ্গো পিপল মিডিয়া একসঙ্গে এই সিরিজের প্রযোজনা করবে বলে টুইটারে নিশ্চিত করা হয়। ওয়েব সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখবেন ‘রাজি’, ‘ব্ল্যাক’ এবং ‘লুটেরা’ সিনেমার কাহানিকার ভবানী আইয়ার। তবে রাজমাতা গায়ত্রী দেবীর চরিত্রেকে অভিনয় করবে সেই বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।
সুন্দরী গায়ত্রী দেবী ছিলেন কোচবিহারের রাজকুমারী। এরপর তার বিয়ে হয় জয়পুরের মহামহিম মহারাজ সাওয়াই মান সিংয়ের সঙ্গে। তবে তিনি ছিলেন এই মহারাজার তৃতীয় স্ত্রী। তাই তাকে জয়পুরের তৃতীয় মহারানী বলা হতো। মহারানী হলেও তিনি রাজনীতি জীবনে ছিলেন বেশ আধুনিক ও সফল একজন নেত্রী। তিনি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিপরীত নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। রানী গায়েত্রী ছিলেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারীর স্বতন্ত্র পার্টির সদস্য। পড়াশোনায় গায়ত্রী দেবী ছিলেন মেধাবী। এ ছাড়া জয়পুরে অনেকগুলো স্কুল প্রতিষ্ঠা করে পেয়েছেন খ্যাতি ও মানুষের ভালোবাসা।
১৯৬২ সালের লোকসভা গায়ত্রীদেবী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হন রেকর্ড ব্যবধানে। এমনকি গিনেস বুক অফ রেকর্ডে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে ভোট পেয়ে জয়ী হিসেবে নাম আসে তার। ১৯৬৭ এবং ১৯৭১-এর লোকসভা নির্বাচনেও তিনি কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৭১-এ জরুরি অবস্থার সময়ে আয়কর আইন অবমাননার দায়ে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। এরপর কেড়ে নেওয়া হয় সমস্ত রাজকীয় সুযোগ সুবিধা।
তিহার জেলে তাকে পাঁচ মাস বন্দিজীবন কাটাতে হয়। এরপরই ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দান থেকে সরে যান গায়ত্রী দেবী। তার এই সংগ্রামী জীবন ওয়েব সিরজের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বলে আনন্দ প্রকাশ করে গায়েত্রী দেবীর পরিবার।