সম্প্রতি ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি অব্যাহত হুমকিস্বরূপ এক বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি নেতার সঙ্গে গুয়াহাটি প্রেসক্লাবের (জিপিসি) একটি সংগঠিত ও ঘোষিত কথোপকথন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্যাট্রিওটিক পিপল’স ফ্রন্ট আসাম (পিপিএফএ)। তারা প্রেসক্লাব কমিটির কাছ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করেছে।
২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে নিষিদ্ধ গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্টের (ইন্ডিপেন্ডেন্ট) স্ব-ঘোষিত সামরিক প্রধান পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে ক্লাবের নিজ প্রাঙ্গণে একটি আনুষ্ঠানিক অডিও সাক্ষাত্কারের আয়োজন করে এই ক্লাব কমিটি। প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট মনোজ নাথ এবং সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় রায়সহ অন্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের লাইভ ফুটেজে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান ছিলেন। তারা আগ্রহের সঙ্গে জঙ্গি নেতার ফোন কলের অপেক্ষায় ছিলেন।
শহরের আমবাড়ী এলাকার জিপিসি মিলনায়তনের একজন কর্মকর্তা পরেশ বড়ুয়ার ফোন কল গ্রহণ করেন। এরপর তার সাউন্ড সিস্টেমটি হস্তান্তর করার কথা ছিল, যেনো উপস্থিত সকল সাংবাদিক পরেশ বড়ুয়ার কণ্ঠস্বর শুনতে পারে এবং তার সঙ্গে কথা বলতে পারে। কিন্তু ডিউটিরত কয়েকজন পুলিশ সদস্য আকস্মিকভাবে সেখানে উপস্থিত হওয়ায় এই কর্মসূচি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই সমাপ্ত হয়।
সন্দেহাতীতভাবে প্রেসক্লাব কমিটি সেই জঙ্গি নেতাকে কথা বলার সুযোগ করে দিতে চেয়েছিল, যে সম্প্রতি কুইপো অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের দুইজন কর্মচারীকে (প্রণব কুমার গোগোই এবং রাম কুমার) হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। এই দুই কর্মচারীকে অরুণাচল প্রদেশের দিয়ুন ড্রিলিং অঞ্চল থেকে তার সশস্ত্র ক্যাডাররা ২১ ডিসেম্বর অপহরণ করে, এবং এরপর থেকে তারা এই জঙ্গি সংগঠনের বন্দী হিসেবে দিনযাপন করছে।
এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের হয়ত মনে থাকবে যে পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফাসহ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠীর আধিপত্যকে অস্বীকার করে এই প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণেই সাংবাদিক এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের একটি ছোট্ট দল জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার সাহস করেছিল। স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণকারীদের ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো। এরপরেও তারা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মিশন হিসেবে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল।
দেশজুড়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত পিপিএফএ-এর বিবৃতিতে বলা হয়, “এটি অত্যন্ত লজ্জার বিষয় যে একজন ভয়ঙ্কর দেশবিরোধী জঙ্গিকে তাদের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ইত্যাদি সম্পর্কে তার অবস্থানকে গৌরবান্বিত করার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে বর্তমান প্রেসক্লাব কমিটি নিবেদিত সাংবাদিকদের চেতনা নিয়ে বিদ্রূপ করেছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
/এফসি/