দ্বীপ জেলা ভোলার বোরহানউদ্দিনের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো দখলের মহোৎসবে মেতেছেন প্রভাবশালী মহল। ফলে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খালগুলো বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বোরো চাষিরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।
সূত্রেমতে, গত কয়েক মাসে বোরহানউদ্দিন পৌর বাজারে দোকান ঘর পিছন দিকে বড় করতে গিয়ে অবৈধভাবে খালগুলো ভরাট করে নিয়েছে তাদের দখলে। একে একে যেন সব দোকানিই মেতেছে এই প্রতিযোগিতায়।
বোরহানউদ্দিন পৌর পিছন বাজার, পশ্চিম বাজার, বোরহানগঞ্জ বাজার, কুঞ্জেরহাট, রাস্তার মাথা মোড়, আবুল বাজার, দরুন বাজার, মনিরাম বাজার খালগুলোতেও একই দৃশ্য। ফলে খালগুলো দিয়ে এখন ট্রলার ও নৌকা ব্যবসায়ীদের মালামাল নিয়ে আসতে পারছে না। এতে ইরি মৌসুমে পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। কৃষিকরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক মকসুদ আলী বলেন, অবৈধভাবে একের পর এক খাল দখল করে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করলেও প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই। শীঘ্রই যদি এসব খাল দখলকারী ঘর উচ্ছেদ করা ও খাল দখল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নতুবা উপজেলায় খাল বলতে কিছু থাকবে না। থাকবে না কৃষিও।
বোরহানগঞ্জ বাজার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খালের মধ্যে বেড়া দিয়ে ভরাটের জন্য কাজ করছেন আ. খালেক মিয়া। শুধু তিনি নন মো. নাছির, মো. বাবুল, মনির কেরানীরা ওই খাল ভরাট করে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।
কতিপয় ব্যবসায়ীর এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অন্য ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বোরহানউদ্দিন ও বোরহানগঞ্জ বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এক সময় এসকল খাল দিয়ে ছোট বড় ট্রলার দিয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা মালামাল কম খরচে আনতে পারতাম। কিন্তু খাল গুলো ভরাট করায় এখন আর ট্রলার ও নৌকা আসতে পারে না। তাই বেশি খরচে সড়ক পথে মালামাল আনতে হয়।
বোরহানগঞ্জ এলাকার কৃষক মো. মিজান জানান, খালগুলো ভরাট করে বাড়ী নির্মাণ করায় খাল একেবারে চিকন হয়ে গেছে। কিছু দিনপর এসকল খালের চিহৃ চিনতে কষ্ট হবে। খাল ভরাট করায় পানি আসতে অসুবিধা হয়। ইরি চাষাবাদ করতে পানির সংকটে পড়তে হয়। আমরা দ্রুত এসব খাল উদ্ধার করে খননের দাবি করছি।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শোয়াইব জানান, বোরহানগঞ্জ বাজারের খাল দখল করে কাজ চলছে খবর পেয়েছি। এ খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে খাল দখলমুক্ত করা হবে।
/আরআর/