‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ স্লোগান নিয়ে প্রতিবছরের মতো এবারো নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ভাষাশহীদদের স্মরণে প্রজ্বালন করা হয়েছে ১ লাখ মঙ্গলপ্রদীপ।
স্কয়ারের আর্থিক সহযোগিতায় নড়াইল একুশের আলো উদযাপন পর্ষদ-২০২১ একুশের ভাষাশহীদদের স্মরণে রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৯৯৮ সাল থেকে নড়াইলে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করা হচ্ছে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে। ভাষাশহীদদের স্মরণে এবারের লাখো মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে উৎসর্গ করা হয়।
নড়াইল একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রবিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক কচি খন্দকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েদ আলী শান্ত প্রমুখ।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ১ লাখ মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন। সন্ধ্যা ঠিক ৬টায় নড়াইলের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আলপনাসহ গ্রামবাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৭০টি ফানুস উড়িয়ে দেন।
পর্ষদের সভাপতি প্রফেসর মুন্সী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এই মঙ্গলপ্রদীপের আলো পৃথিবীর সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে আলোকিত করবে। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান হয় না।’ তাই অনুষ্ঠানটির মূল্যায়ন করে এটি ওয়ার্ল্ড গ্রিনিচ বুকে নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানান।
সাধারণ সম্পাদক নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। একুশের এই মঙ্গলপ্রদীপের আলোয় দূর হবে সব অন্ধকার। এ উদ্দেশ্য নিয়েই আমাদের এ আয়োজন।’
প্রতিবছরের মতো এবারো ঢাকাসহ নড়াইলের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এই মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন।