বেঁচে থাকার জন্য মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর একটি হচ্ছে খাবার। সময়মতো খাবার গ্রহণ করতে না পারলে, মানুষ কর্মক্ষমতা হারায়। আবার অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করলেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই প্রয়োজন পর্যাপ্ত সুষম খাবার। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের মাঝে রয়েছে নানা ভুল ধারণা। বিশেষ করে যাদের ওজন একটু বেশি। এমন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক চেষ্টা করেও ওজন কমাতে পারছেন না। আবার কিছুটা ওজন কমলেও তা কিছুদিন পরেই বেড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে একদিকে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। অপরদিকে জীবন থেকে যাবতীয় সুখাদ্য প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু কখনো ভেবেছেন কি, ডায়েট ও ওয়ার্কআউট-সংক্রান্ত কিছু ভুল ধারণা মেনে চলার কারণেই হয়তো এই অবস্থা। সুতরাং ভুল ধারণাগুলো পাল্টে ফেলুন এখনই।
* অনেকে বলে গরম পানি খেলে ওজন কমে। এটি ভুল। তবে যাদের খাবার হজম হতে দেরি হয়, তাদের জন্য গরম পানি উপকারী। খাওয়ার পরে গরম পানি খেলে হালকা বোধ হয়। কিন্তু এতে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট অপসারণ বা ভাঙে না। ফ্যাট আসলে শরীরের জন্য জ্বালানি। মানুষের কাজকর্মে যা ব্যবহৃত হয়। কায়িক শ্রম বা ওয়র্কআউট ছাড়া ফ্যাট কখনোই ভাঙা সম্ভব নয়।
* স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমাণে বেশি খেলেও সমস্যা নেই। এমন ভুল ধারণার জন্যও অনেকের ওজন কমে না। মনে রাখতে হবে, লো ফ্যাট, লো সুগার, লো ব্যাড কার্ব জাতীয় খাবার ও বেশি পরিমাণে শাকসবজি-ফলযুক্ত ডায়েট অবশ্যই হেলদি। কিন্তু এ ধরনের খাবারও পরিমাণমতো গ্রহণ করতে হবে।
* নিয়মিত ওয়ার্কআউট করলে এনার্জি ড্রিংক পান করা যায়। এমন ধারণা নিয়ে যারা ওয়ার্কআউট শুরু করে। তাদের ক্ষেত্রে বলা উচিত আগে এনার্জি ড্রিংক ছাড়ুন, তারপর ওয়ার্কআউট শুরু করুন। যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রেই বোতলবন্দী যেকোনো পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা, এগুলোতে প্রিজারভেটিভ, কৃত্রিম রঙ, কেমিক্যাল ও আরো অনেক অবাঞ্ছিত উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য অপ্রয়োজনীয়।
* বেশি মাসল তৈরি করতে হলে বেশি প্রোটিন ইনটেক প্রয়োজন। যদি সত্যিই স্বাস্থ্যসচেতন হতে চান, তবে সবার আগে জানুন আপনার কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন। কেননা, বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিরামিষাশীরাও প্রয়োজনের তুলনায় দু-তিন গুণ বেশি প্রোটিন গ্রহণ করেন। আর অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির ক্ষতি করে, শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতির কারণ হতে পারে। আর অতিরিক্ত প্রোটিন কিন্তু শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমা থাকে।
* ওজন কমাতে বেশি বেশি ফ্রুট ও ভেজিটেবল জুস কার্যকর। জুস মানেই অতিরিক্ত চিনি সঙ্গে আরো অ্যাডেড কেমিক্যাল। সুতরাং ভালো খেতে চাইলে গোটা ফল খান। ভেজিটেবল জুসের বদলে স্যালাড খান। এতে খাবারের পরিমাপ সঠিক থাকবে। মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবারও যদি বেশি খাওয়া হয়, তবে তা শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট হিসেবেই সঞ্চিত থাকবে।
* দ্রুত ওজন কমাতে ডায়েট পিলস গ্রহণ। যেকোনো ধরনের কৃত্রিম বা প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করা উচিত। প্রাকৃতিক এবং অর্গানিক খাবার খান। ডায়েট পিলে সাময়িক ওজন কমলেও পরে আর তার প্রভাব থাকে না। এ ছাড়া ডায়েট পিলস নানা রকম শারীরিক সমস্যা, যেমন ইনসমনিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা ইত্যাদির কারণ হতে পারে।