হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনার আলোকে দেশের নয়টি স্থল ও নৌ-কাস্টমস স্টেশনে (বন্দরে) অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার বা কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট স্থাপন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেগুলোতে ফল আমদানিতে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষা করা হবে।
এই বিষয়ে একমত হয়েছে এনবিআর ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আলোচিত ওই নয়টি স্টেশন ভোমরা, বুড়িমারী, হিলি, বাংলাবান্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফে অবকাঠামোগত উন্নয়নে অর্থায়নে রাজি হয়েছে এডিবি।
এর অংশ হিসেবে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বলে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে দেয়া এনবিআরের প্রতিবেদন বলা হয়েছে।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে প্রতিবেদনটি জমা দেয় এনবিআর। পরে উত্থাপিত হলে এ বিষয়ে শুনানি আজ নয় (নট টুডে) বলে আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, আগামীকাল সোমবার (১৮ জানুয়ারি) শুনানিটি হতে পরে।
রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, এর আগে এ বিষয়ে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আজ একটির অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা হয়েছে। হাইকোর্টে আরও শুনানি হতে পারে।
২০১০ সালে দেশের বিভিন্ন স্থল ও নৌ বন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক কেমিক্যালযুক্ত ফল আমদানি রোধে রিটটি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সব স্থল ও নৌ-বন্দরে ছয়মাসের মধ্যে কেমিক্যাল টেস্ট ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে আমদানি করা ফলের কেমিক্যালমুক্ততা নিশ্চিত হয়ে দেশে ঢোকানোর ব্যবস্থা করতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এরপর আদেশের ধারাবাহিকতায় রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে সংস্থাটির কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট।
সে অনুসারে জমা দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে দেশের ছয়টি কাস্টম হাউস এবং ১৪টি শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে ফল আমদানির সুযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও বেনাপোলের মাধ্যমে বেশিরভাগ ফল আমদানি করা হয়। চট্টগ্রাম ও বেনাপোলে রাসায়নিক ল্যাবরেটরি রয়েছে।
অন্য কাস্টমস হাউসগুলোতে আমদানি করা ফল কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের মাধ্যমে রাসায়নিক পরীক্ষা শেষে খালাস করা হয়।
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এই পরীক্ষা করতে এডিবির আর্থিক সহযোগিতায় ঢাকায় একটি সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। এ লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এডিবির টেকনিক্যাল টিমের যাতায়াত ছয়-সাত মাস বন্ধ ছিল। এতে তাদের ফিজিবিলিটি টেস্টের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে পুনরায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৪টি স্থল কাস্টমস স্টেশনের মধ্যে ভোমরা, বুড়িমারী, হিলি, বাংলাবান্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফের মাধ্যমে ফল আমদানি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফরমালিন টেস্ট করা হয়।
/একে/ এআর/