মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হলুদ (বৈজ্ঞানিক নাম- Curcuma longa) একপ্রকার রাইজোম যা বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। বহু শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে শ্বাসকষ্টের বিভিন্ন সমস্যার ওষুধ হিসাবে হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি, হলুদকে একটি সুপার ফুড হিসেবে ধরা হয়। কারণ, হলুদ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম, হতাশা কমায় এবং আরো অনেক কিছু উপকার করে। চলুন দেখে নিই হলুদ আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কী কী ভূমিকা পালন করেঃ
১। টাইপ-২ ডায়াবেটিস: কারকিউমিন প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করতে এবং ব্লাড সুগারের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। তাই টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা এর চিকিত্সার জন্য এটি কার্যকরী উপকরণ হতে পারে। একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রি-ডায়াবেটিস থাকা অবস্থায় ২৪০ জন বয়স্ক ব্যক্তিদের ৯ মাসের বেশি সময় ধরে কারকিউমিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করায় তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।
২। উচ্চ কোলেস্টেরল: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ এলডিএল বা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে পারে। হলুদের কোনো হার্ট-প্রোটেকটিভ সম্ভাবনাগুলো আছে কি না, তা নিয়েও বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। একটি ছোট্ট গবেষণায় দেখা গেছে, বাইপাস সার্জারি করা লোকদের হার্ট অ্যাটাক বন্ধ করতে হলুদের ভূমিকা রয়েছে।
৩। ক্যান্সার: বিজ্ঞানীরা ল্যাবরেটরিতে প্রাণীদের ওপর গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন, হলুদ টিউমার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয় এবং ডিটক্সিফাইং এনজাইমগুলোর কার্যকারিতা আরো বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া হলুদ কিছু কেমোথেরাপির ওষুধেও ব্যবহৃত হতে পারে।
৪। আরথ্রাইটিস: জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া বা জয়েন্টে ব্যথা এবং প্রদাহ কমিয়ে ফেলায় হলুদের অত্যন্ত কার্যকরী গুণাগুণ রয়েছে। জয়েন্টে ব্যথা কমাতে হলুদের আরো ভালো গুণাগুণ পেতে হলে এর সঙ্গে গোলমরিচ খান। এতে শরীর প্রাকৃতিক কারকিউমিন ভালোভাবে শোষণ করতে পারবে।
৫। হতাশা: বিজ্ঞানীদের ধারণা, হলুদের সর্বাধিক পরিচিত গাঠনিক উপাদান কারকিউমিন, যা হতাশা কমাতে পারে এবং প্রতিষেধকগুলোকে আরো ভালোভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।
৬। ভাইরাল ইনফেকশন: গবেষণায় দেখা যায়, কারকিউমিন হার্পিস এবং ফ্লুসহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে।
৭। আলঝেইমার রোগ: আলঝেইমার আক্রান্ত ব্যক্তিদের দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হয়। হলুদের প্রদাহবিরোধী গুণাগুণ থাকায় এটি আলঝেইমার রোগীদের প্রদাহ কিছুটা উপশম করতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
৮। ব্রণ: হলুদের পেস্ট মুখে লাগালে ব্রণ দূর হয়। হলুদ খেলেও ব্রণ কম থাকে তুলনামূলকভাবে। কারণ, হলুদের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে।
সূত্র: ওয়েবএমডি স্লাইড শো থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত
অনুবাদ: জারিন তাহসিন আনজুম